শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদ :

কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদণ্ডী কালু ফকিরপাড়া আদর্শ বালিকা মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী শারমিন আক্তারের (১৪) বাল্য বিবাহ পন্ড করে দেওয়ার পরও রাতের অন্ধকারে ফের বধু নামিয়ে আনল খোদ জালালাবাদ এডভোকেট মুজিবুর রহমান আদর্শ স্কুলের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন।। যার বিয়েটি গত শুক্রবার দুপুরে অপরিণত বয়সে বধু সেজে শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল। অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী শারমিনের বাল্যবিয়ের খবরটি গণমাধ্যমে  প্রকাশিত হলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাবিবুল হাসানের নজরে আসে। এছাড়া অন্যান্য মাধ্যমেও বাল্যবিয়ের বিষয়টি জানতে পারেন ইউএনও।

স্থানীয়রা জানান, কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের উত্তর মাইজপাড়া এলাকার মো. আলীর কিশোরী মেয়ে শারমিন আক্তারের সাথে বিয়ে ঠিক হয় ইসলামাবাদ ইউনিয়নের দক্ষিণ খোদাইবাড়ী এলাকার মোহাম্মদ বশিরের ছেলে মো. রুহুল আমিনের সাথে। বিয়ের কাবিননামা করার জন্য কনের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি ভূয়া জন্ম সনদও তৈরী করা হয়।

ওই জন্ম সনদ দিয়ে কাবিননামা সম্পন্ন করা হয়।চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওয়াজ করিম বাবুল জানিয়েছেন শারমিন নামের ওই কিশোরীর বাল্যবিয়ের বিষয়টি বৃহস্পতিবার আমি জানতে পারি। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি ইউএনও স্যারকে জানায়। পরে আজ শুক্রবার দুপুর ১২ টায় ইউএনও স্যার উপস্থিত হয়ে এই বাল্যবিয়ে বন্ধ করে দেন।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাবিবুল হাসান মুঠোফোনে জানায়, খবর পেয়ে চৌফলদন্ডীর মাইজপাড়া এলাকায় কনের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। ওই সময় অভিযান টের পেয়ে কনের বাবা ও অভিভাবকেরা পালিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে শারমিনের বিয়ে হবে না। তার পূণরায় পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সব ধরণের সহযোগিতা দেওয়া হবে। একই সাথে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

কিশোরী শারমিনের কাবিননামা সম্পন্ন করে ইসলামাবাদের কথিত কাজী আবু বক্কর । আবু বক্করের বিষয়ে ইউএনও বলেন, তাকে (কাজী) ফোন দেওয়া হয় বাড়িতে উপস্থিত হওয়ার জন্য। কিন্তু তাৎক্ষণিক তিনি ফোন বন্ধ করে দেন। তার (কাজী) বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে একই দিন রাতে স্থানীয় মেম্বারের সহযোগীতায় নাবালক মেয়ে শারমিনকে স্বামীর পিত্রালয়ে পৌছে দেন।বর্তমানে মেয়েটি ইসলামাবাদ তেতুল তলী এলাকায় স্বামীর সৎ মায়ের ঘরে রয়েছে।এদিকে ইউএনও’র অভিযানে বন্ধ হওয়া বাল্য বিবাহ পুনরায় শেষ করায় ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে স্থানীয়রা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হাসান জানান, কাজী এবং উভয় পক্ষের অভিভাবককে ডাকা হয়েছে।বিহীত পদক্ষেপ নেওয়া হবে তাদের বিরুদ্ধে।